Friday, 16 September 2016

বিয়ে করে বাঁশ আনছি ঘরে


-রাফি শোন, আজকে আমি একটা প্লান
করছি।
-শোন রাইসা তোমার সবকাজ গুলো
আমার কাছে
বাঁশ মনে হয়।
-কি বললে তুমি?
-শুনতে পাওনি কি বলছি।
-আমি যা বলি সবি তোমার কাছে
বাঁশ মনে হয়। যখন
অন্য কোন মেয়ে কিছু বলে সেগুলো কি
মনে হয়।
-রাইসা সকাল সকাল তোমার সাথে
ঝগড়া করার ইচছা
আমার নেই।
-কিইইই আমি তোমার সাথে ঝগড়া
করছি ।
-তো কি করছ এই সকাল সকাল এইগুলো।
-যাও আজকে রান্না বন্ধ সারাদিন। না
খেয়ে থাকতে
হবে তোমাকে।
-দেখো রাইসা আমি ভুল করে
ফেলেছি আর
এমনটা হবে না।
-একশোবার কান ধরলেও কোন লাভ নাই।
-রাইসাকে কোন ভাবেই বুঝাতে
পারলাম না, সে
কোনমতেই আজকের রান্না করবে না।
সারাদিন না খেয়েই থাকতে হবে
আজকে।
..
.
-মেয়েদের মাথাই অনেক বুদ্ধী। সেটা
বিয়ে
করার পরে জেনেছি। গতকাল আমার
কাজের
বেতন দিয়েছে।
-বাড়িতে আসার পরে রাইসা সেগুলো
সব নিয়ে তার
কাছে রেখে দিয়েছে।
-আমি নাকি এতটাকা হারিয়ে
ফেলতে পারি।
-এখন আমি বুঝতে পারছি, রাইসা আমার
সাথে ঝগড়া
করবে আর আমাকে না খাইয়ে রাখবে।
আজকে যেভাবেই হোক তার মন থেকে
রাগ
দুর করতে হবে নইলে আমি একদম শেষ।
""
""
-রাইসা আমার অনেক ক্ষিধা
লেগেছে।
-তো আমি কি করব।
-তুমি এবাড়ির বউ, বউয়েরা যেটা করে
তুমিই সেটা
করবে।
-কে এবাড়ির বউ।
-তুমি।
-কিইইইই বললে.
-হ্যাঁ যেটা সত্য আমি সেটাই সবসময়
বলি। তোমাকে
বিয়ে করে এনেছি আমি।
-তো এখন কি করতে হবে চাকরাণীর
মতন কাজ
করতে হবে।
-না সেটা করবে কেনো, শুধু আজকে
রান্না টা
করো।
-বলছি না করবো না রান্না।
-মেয়েদেরকে আমি বোকা
ভাবছিলাম, কিন্তু ইনি
তো দেখছি একদম বেশি চালাক।
-বেতনের টাকাটা আমার কাছে
থেকে নিয়ে
নিয়েছে। এখন ঝগড়া বাধিয়েছে,
রাইসা তো
জানেই যে আমার কাছে কোন টাকা
নাই এখন রাইসা
যা বলবে সেটাই আমাকে শুনতে হবে।
আসলেই বুদ্ধীমতি মেয়ে।
..
.
-রাইসা সত্যি কি আজকে রান্না করবে
না।
-কি বলেছি শোন নাই।
-না খেয়ে থাকতে হবে আজকে।
-হ্যাঁ।
-কিছু টাকা দাও আমি বাইরে গিয়ে
খাবো।
-হবে না টাকা।
-কেনো আমার টাকা আমাকে দিবে
না তুমি।
-তোমার টাকা প্রমাণ কি?
-প্রমাণ তো নাই।
-তাহলে এখন যাও।
-কি আর করা নাস্তার টেবিলের
সামনে গিয়ে তিন
গ্লাস পানি খেয়ে আসলাম।পেটকে
তো একটু
শান্তি দিতে হবে।
আমার পানি খাওয়া রাইসা দেখতে
পেয়েছিলো,এখন
যদি তার মন থেকে একটু রাগ কমে
তাহলে
আজকের রান্নাটা হবে।
-কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না।
-কি আর করা রাইসা যখন রান্না করবেই
না তখন ঘুমাই
পড়ি।
-ঘুমালে ক্ষিধা কম লাগে।
-রাইসাকে কিছু না বলে ঘুমিয়ে
পড়লাম।
..
..
-ঘুম থেকে উঠে পড়লাম পেটের
যন্ত্রনাই।
মনে হচেছ সামনে যা পাই তাই খেয়ে
নিবো।
-বিছানা ছেড়ে উঠে রান্না ঘরের
দিকে গেলাম।
-রাইসা দেখি কোন রান্নাই করে নি।
মেজাজটা এবার
আরো গরম হয়ে গেলো।
-রাইসাকে এবার কিছু বলা দরকার।
আমি আছি না খেয়ে
সে করছে আমার সাথে মজা।
তার রাগের দাম আছে, আমার রাগের
দাম নাই।
-ভিতরে গিয়ে দেখি রাইসা বসে
থেকে টিভি
দেখছে।
-কি ব্যাপার রাইসা তুমি কি রান্না
করবে না।
-না করব না।
-কেনো করবে না, সামান্য একটু বিষয়
নিয়ে
এতো বারাবারি করাটা ঠিক হচেছ
না।
-আমার বিষয় আমি বুঝবো।
-রাইসার সাথে কথা বলে ক্ষিধাটা
আর বাড়াতে চাই না।
সোজা রুমে এসে পানি খেলাম।
আবার ঘুম দিলাম।
বিয়ে করে বিপদে আছি কিছু বলতেই
পারি না আবার
কিছু করতেও পারি না।
.
..
-এই রাফি উঠো।
রাফি,এই রাফি।
-কারো ডাকে ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
ঘুম থেকে উঠে দেখি রাইসা ডাকছে ।
-কি ব্যাপার ডাকছ কেনো।
-রান্না করছি খেতে আসো।
-কেনো এখন রান্না করছ কেনো, যখন
খাবার
খেতে চাই তখন পাই না, এখন ক্ষিধে
নেই।
-তুমি কি খেতে আসবে, না আমি অন্য
ব্যাবস্থা
করবো।
-কি করবে শুনি।
-বাবার বাড়িতে চলে যাবো।
-এতে আমার কোন সমস্যা হবে না, তুমি
যেতে
পারো।
-রাফি তুমি উঠলে?
-না রাইসার জ্বালাই কিছুই করতে
পারব না ।
-ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে খেতে
গেলাম।
-তুমি তো রান্নাটা আগেও করতে
পারতে।
-তাহলে তুমি বুঝতে কি করে আমার
প্রয়োজন টা।
-তাই বলে সারাদিন না খেয়ে
থেকে?
-হুম এটা আমার ইচছা।
-খাওয়া সেরে এসে বিছানাই আবার
শুয়ে পড়লাম।
কি আর করব সারাদিন ঝামেলা পার
করে না খেয়ে
থেকে যেমনটা হয়েছিলো অবস্থা।
এখন একটা লম্বা ঘুম দিবো।
এমন সময় রাইসার আগমন রুমে ।
-তুমি তো অন্যদিন রাতে টিভি দেখে
পরে ঘুমাতে,
আজকে এতো তারাতারি ঘুমাতে
আসলে কেনো?
-এমনিতেই ঘুম ধরেছে তাই।
-এসেই বিছানাই শুয়ে পড়ল।
-আমিও শুয়ে পড়লাম।
-কিছুক্ষণ পরে,
..
..
-আমার বালিশে শুয়ে থাকতে ইচেছ
করছে না।
(রাইসা)
-কেনো কি সমস্যা বালিশের। (আমি)
-বালিশে প্রচন্ড গরম লাগছে।
-এখন কি করবে তাহলে।
-তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবো।
-ওহ তাহলে এই ব্যাপার।
-হুম।
-হবে না বুকের উপর ঘুমানো।,
-কেনো?
-সারাদিন তাহলে এমন করলে কেনো।
-ভালোবাসি তাই.
-আমি কি তোমাই ভালোবাসি না।
-আমার চেয়ে কম।
-কি বললে তুমি?
-হুম এইজন্য তো মাঝে মাঝে তোমাকে
কষ্ট
দিই জেনো আমাকে বেশি
ভালোবাসো।
-কি বললে তুমি, দাড়াও,
বলেও রাইসাকে বুকের মাঝে ঝড়িয়ে
ধরলাম।
রাইসা আমার বুকের উপর মাথা রেখে
ঘুমিয়ে পড়ল।
রাইসা যে কেমন আমি আজও বুঝতে
পারি
নি,আজকে এমন করছে কালকে আবার
প্রচন্ড
রকমের ভালোবাসবে , পছন্দের সব
খাবার গুলো
রান্না করবে।
রাইসাকে বিয়ে করে ঘরে বউ না বাশ
আনছি কিছুই
বুঝতে পারি না আমি।
এভাবেই চলছে আমাদের জীবন।

No comments:

Post a Comment