Friday, 16 September 2016

আমি শুধু তোমার

:-ওই কুত্তা
:-চিল্লাস কেন প্যাঁচী?
:-তুই এদিকে আয় তারপর বলছি চিল্লাই
কেন?
:-হ আমাকে ত বলদ পাইছিস।আমি
বাঘের সরি বাঘিনীর
কাছে যাই আর সে আমাকে খেয়ে
ফেলুক।
:-আয় বলছি না হলে কিন্তু খবর আছে।
:-সেই খবর আমি টিভিতে দেখে নিব।
কিন্তু এখন আমি
আসতে পারব না মিস.বাঘিনী।
:-কুত্তা তোরে আমি সামনে কোনদিন
পাব না নাকি।
যেদিন পাব সেদিন দেখবি কি যে
করি?
:-সেদিন দেখা যাবে।
:-আচ্ছা মনে থাকবে ত।
:-হুম একশবার মনে থাকবে।
:-ওকে।কাল যে স্যারের এসাইমেন্টটা
আছে তোরটা তুই
করবি আমারটা আমি।ভালই হল আমার
কষ্ট কিছুটা কমে
গেল।
:-দোস্ত।
এ বলেই আবিদ দৌড়ে চলে যায়
ঈশিতার কাছে।
:-এখন আমার কাছে আসলি কেন?
:-দোস্ত তোর কাছে আসব না তাহলে
কার কাছে যাব।
:-কেন? ক্যাম্পাসে আসার সময় রিক্সায়
করে যেই
মেয়েকে নিয়ে আসলি তার কাছে?
:-আরে ধুর চিনি না জানি না।তার
কাছে কেন যাব।
:-চিনস না তাহলে রিক্সা করে নিয়ে
আসলি কেন?
:-আরে আমি রিক্সা করে আসছিলাম
মেয়েটা বলল
ভাইয়া,আমাকে একটু হেল্প করবেন আমি
না রিক্সা
পাচ্ছি না।বুঝিসত কেউ আবদার করলে
ফেলতে পারি
না।
:-সত্যি ত।
:-কেন?আমাকে তোর বিশ্বাস হয় না।
:-হয়ত।চোরের মত বিশ্বাস হয়।
:-ছি. তুই আমাকে এভাবে বলতে
পারলি।যা আমার
এসাইনমেন্ট আমি করব তোর করে দেয়া
লাগবে না।
:-মনে থাকবে ত।
:-হুম মনে থাকবে।
এই বলে আবিদ সেখান থেকে উঠে
চলে যায়।
রাত ১২টা।আবিদ ঈশিতার মোবাইলে
কল করছে কিন্তু
ঈশিতা ফোন ধরছে না তার কারন কল
রিসিভ করলেই
বলবে এসাইনমেন্টটা যেন করে নিয়ে
আসে।দেখুক
এসাইনমেন্ট করতে কেমন লাগে?
অন্যদিকে আবিদ
ফোনের উপর ফোন করেই চলেছে কিন্তু
ফোন ঈশিতা
ধরছে না।
পরেরদিন সকাল ১০টা।মাঠে বসে আছে
ঈশিতা।আর
নিজের এসাইনমেন্টগুলা দেখছে।
খানিক সময় পর
আবিদের আগমন। এসেই বলল
:-আমার এসাইনমেন্টটা দে।
:-তোর এসাইনমেন্ট আমি কোথা থেকে
দিব।তোরটা ত
তোর করে নিয়ে আসার কথা না।
:-আরে আমিত মজা করে বলছিলাম।দে
আমারটা।
:-তুই না করাতে আমি করিনাই।
:-ফাজলামো ভাল লাগছে না ঈশিতা।
প্লিস দে।
:-আজব তো আমি কোথ থেকে দিব।
আমিত করি নাই।
:-আচ্ছা ঠিক আছে আমি চলে গেলাম।
:-ওকে যা।
.
আবিদ রাগ করে ঈশিতার সামনে
থেকে উঠে চলে যায়
মামার চায়ের দোকানে। ঈশিতা
একটা পিচ্ছিকে
দিয়ে আবিদের
এসাইনমেন্টটা তার কাছে পাঠায়।
পিচ্ছি:-ভাই এই নেন।
আবিদ:-কি এটা?
:-আমি জানি না।ওই যে আপাকে
দেখছে ওনি দিছে
আমারে।বলছে আপনাকে দিতে।
আবিদ পিচ্ছির কাছ থেকে এসাইনমেন্ট
নিয়ে ঈশিতার
সামনে চলে যায়।
আবিদ:-মিথ্যা বললি কেন?
ঈশিতা:-দেখলাম তুই করলি নিয়ে
এসেছিস নাকি।
:-রাতে যে এতবার কল করলাম ধরলি না
কেন?
:-কুত্তা তোর এসাইনমেন্ট করছিলাম
তখন।
:-লাগবে নে তোর এসাইনমেন্ট নিয়ে
নে প্যাঁচি।
:-এত ডং করা লাগবে না কুত্তা।বহুত
হয়েছে।এবার
ক্লাসে চল।
.
আবিদ এবং ঈশিতা।দুজন প্রাইভেট
বিশ্ববিদ্যালয়ে একই
ডিপার্টমেন্টে পড়ে। দুজনের মধ্যে সব
সময়ই একটা না
একটা বিষয়
নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকে।কিন্তু
সেই ঝগড়া বেশিক্ষণ
স্থায়ী হয় না।আর এই ঝগড়া তাদের
মাঝে কখনো দুরত্ব
সৃষ্টি করে
না।বরং ঝগড়ার মাঝে তাদের বন্ধুত্ব
গাঢ় হয়।
ক্যাম্পাসের অনেকেই জানে তাদের
মাঝে ভালবাসার
সম্পর্ক আছে।কিন্তু তাদের মাঝে এখন
পর্যন্ত এ ধরনের
কোন সম্পর্ক গড়ে উঠেনি।মনে মনে দুজন
দুজনকে
ভালবাসলেও কেউ কাউকে বলে উঠতে
পারেনি।আবিদ
মন থেকে প্রচন্ড ভালবাসে ঈশিতাকে
কিন্তু আবিদ
দেখতে একটু কালো বলে ভালবাসার
কথাটা বলতে সাহস
পায় না সে কারন ঈশিতার সাথে
তাকে মানায় না।
ঈশিতা দেখতে অনেক সুন্দরি।ক্যাম্প
াসের অনেক
ছেলেই তার সাথে সম্পর্ক গড়তে চায়।
.
একদিন আবিদ দেখল ঈশিতা একটা
ছেলের সাথে
রিক্সায় করে ভার্সিটিতে এসেছে।
আবিদ দূর থেকে
দেখল।ছেলেটা দেখতে অনেক সুন্দর
মানে সুদর্শন পুরুষ।
ঈশিতার সাথে মানিয়েছেও ভাল।
আবিদের মন খারাপ
হয়ে গেল।নিজেকে এই ভেবে
সান্ত্বনা দিল যে ,”বামন
হয়ে চাঁদে হাত দিতে নেই” মানে
কালো হয়ে সুন্দর
কাউকে চাওয়া উচিত নয়।
>
ক্লাস শেষ হয়ে গেল।এখন পর্যন্ত
ঈশিতার সাথে কথা
হয়নি।আবিদের সকালের ঘটনার পর
এখনো মনটা খারাপ।
ক্লাস শেষে সোজা বাড়ির পথে
রওনা দিল।পিছন
থেকে ঈশিতা ডাকছে কিন্তু আবিদের
সাড়া নেই।সে
সাড়া না দিয়ে তার মত করে হেটে
চলছে।একটা
পর্যায়ে ঈশিতা আবিদ এর সামনে এসে
দাঁড়াল এবং
বললঃ-কিরে এত করে ডাকছি উওর নেই
কেন?
–আসলে ঠিক শুনতে পাইনি।
–একটা মজার ঘটনা ঘটেছে আজ।শুনবি
–বল শুনি।
–আসলে রাজীব আজকে আমাকে
প্রোপজ করেছে।
–কোন রাজীব?
–আরে তোকে ত বলাই হয়নি।আসলে
ওনাকে আমি খুব
পছন্দ করি।ওনিও করত কিন্তু ভয়ে বলতে
পারেনি।আজ
সাহস করে বলে দিয়েছে।
–তুই কি উওর দিলি?মানে রাজী হলি
নাকি ফিরিয়ে
দিলি।
–ফিরিয়ে দিব তোর মাথা খারাপ।
আমিও হ্যা বলে
দিয়েছি।
>
আবিদ উওরটা শুনে হাটা দিল।ঈশিতা
ডাক দিলেও
পিছনে ফিরেনি।সে বাসায় চলে
এসেছে।পরেরদিন
থেকে ঈশিতাকে ছেলেটা প্রতিদিন
ভার্সিটি
নামিয়ে দিয়ে যেত।আবিদ সহ্য করতে
পারত না।নিজের
ভালবাসার মানুষকে অন্যজনের হাত
ধরে ঘুরে বেরায়
সেটা তার সহ্য হচ্ছিল না।
>
একদিন আবিদ একটা চিঠি পাঠায়
ঈশিতাকে।সেখানে
লেখা ছিল-আসলে আমি তোকে
ভালবাসতাম।অনেক
ভালবাসতাম।কিন্তু আমি কালো বলে
বলতে পারিনি।
এখন তুই অন্যজনের হাত ধরে ঘুরিস যদিও
ছেলেটা অনেক
সুন্দর দেখতে।আমার এটা সহ্য হয় না।
যাকে ভালবাসি
সে অন্যের হাত ধরে আমার চোখের
সামনে ঘুরবে এটা
আমি মানতে পারব না।তাই আমি এই
ভার্সিটি ত্যাগ
করতেছি ।ভাল থাকিস।
>
চিঠিটা পড়ার পর ঈশিতা আবিদকে
ফোন করে
আগামীকাল পার্কে দেখা করতে
বলে।
পার্কে পাশপাশি দুজন।ঈশিতা
জিজ্ঞাস করেঃ-
ভার্সিটি ছেড়ে চলে যাবার মানে
কি?
–জানি না।
–আমাকে ভালবাসিস।
–সেটাও জানি না।
— জানসটা কি?তাহলে চিঠিতে
বলেছিলি কেন তুই
আমাকে ভালবাসিস।
আবিদ নিশ্চুপ।ঈশিতা জিজ্ঞাস
করেঃ-সত্যি
ভালবাসিস।
আবিদ মাথা নাড়ায়।ঈশিতা আবার
বলেঃ-ছেড়ে যাবি
নাত আবার।
–কিন্তু ঐ ছেলে।
–আরে হাদারাম ঐটা আমার কাজিন
আমাকে সে
অফিসে যাবার পথে নামিয়ে দিয়ে
যেত।আমার
ভার্সিটির পরেই তার অফিস।
–তাহলে আমাকে বললি কেন ঐটা তর
বয়ফ্রেন্ড?
–তোর মুখ থেকে সত্য কথাটা বের
করতে।কিন্তু আমার
সাথে রিলেশন করতে হলে শর্ত আছে।
–কি শর্ত?
–আমাকে তুমি করে বলতে হবে।
আবিদকে উঠে দাঁড়াল এবং বললঃ-
তোকে আমি প্যাচী
,প্যাচী,প্যাচী করে ডাকব।
এটা বলেই দৌড় দিল।আর ঈশিতা
বললঃ-দাড়া কুত্তা
আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।

No comments:

Post a Comment