Friday, 16 September 2016

নামহীন গল্প


.
:- তোমাকে না বলছি অন্য ছেলেদের
সাথে কথা বলতে না..!??
- > ওরা আমার ফ্রেন্ড ৪-৫ বছর এক সাথে
পড়েছি কথা না বললে কি হয়।
:- তুমি নিষেধ করার পর আমি তো কোন
মেয়ের সাথে কথা বলিনি। তুমি
তোমার মেয়ে বন্ধুদের সাথে কথা
বলো সমস্যা নেই কিন্তু ছেলে বন্ধুদের
সাথে কোন কথা বলবে না এটা আমি
পছন্দ করি না।
- > তোমার পছন্দ অপছন্দে আমার কিছু
যায় আসে না,তুমি ছাড়াও আমার
পার্সোনাল লাইফ আছে যা আমি
এড়িয়ে চলতে পারবো না।.!!!
:- কি..!!!!!!? আমি ছাড়া তোমার অন্য
পার্সোনাল লাইফ..!!?? আমি তোমার
স্বামী আমার কি তোমাকে কিছু
বলার, নিষেধ করার অধিকার নেই।.??
- > বেশী অধিকার ফলাতে এসো না।.!!
:- সরি, তোমাকে নিষেধ করা ভুল হইছে
আমার ক্ষমা চাই। ক্ষমা করে দিও
আমায়।
.
নিধির কথা শুনে আবির খুব কষ্ট পেলো।
আবির কল্পনাও করেনি এমন কথা বলবে
বা বলতে পারে নিধি।নিজের
অজান্তেই কয়েক ফোটা অশ্রু গড়িয়ে
পড়লো । নিধিকে আবির অনেক অনেক
বেশী ভালবাসে।
.
- > কি ব্যপার না ঘুমিয়ে অমন করে কি
দেখছ।..?
:- আচ্ছা নিধি ধরে নেও আমি নেই.!
আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে।.?
- > কেন কোথায় যাবে তুমি.!!??
:- এমনি ধরে নেও মানুষ এই আছে এই নাই
কখন কি হয় বলা তো যায় না, আমায়
ছাড়া একা থাকতে পারবে।.!!?
- > এসব কি বলতেছ ঘুমাও তো।
:- আমার কথা কি মনে পড়বে।.!!?
- > না একটুও মনে পড়বে না।
:- আমি তোমার যোগ্য নই তাই না..!!!?
- > আমার এসব একটুও ভাল লাগছে না
ঘুমাও আর একটা কথাও বলবে না।
নিধি ওপাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়লো।
.
সকাল বেলা চোখ খুলতেই নিধি
দেখতে পেলো আবির ওর দিকে চেয়ে
আছে। আবিরের চোখ দুটো লাল
পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে রাতে ঘুমায়
নি আবির।
- > কি ব্যপার সারারাত ঘুমাও নি.!?
:- হুম, ঘুমিয়েছিতো একটু আগে উঠলাম।
- > তুমি তো আমার আগে উঠো না আজ
কেন.?
:- না এমনি।
আবির কখনোই নিধির সাথে মিথ্যা
বলেনা সেটা যেই বিষয় হোক। কিন্তু
নিধি স্পটই বুঝতে পারলো আবির
মিথ্যে বলছে আবির সারারাত
ঘুমায়নি ।
.
আবির প্রতিদিন বের হবার সময় নিধির
কপালে চুমু খেয়ে বের হয়। আজ দুবার চুমু
খেলো অন্য দিন হাসিখুশি যায় আজ
চুপচাপ চোখে পানি ছলছল করছে।
:- যাই বাবু। (কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে
আবার ফিরে আসলো)
- > কি হলো কিছু ফেলে গেছো.!?
:- না।
- > তবে..!?
কিছু না বলে নিধিকে জড়িয়ে ধরলো
কপালে আবার চুমু খেলো।
:- লক্ষী হয়ে থেকো বাবু। ( নিজেকে
কনট্রোল করতে পারছে না আবির আর
কিছু না বলে চলে আসলো)
নিধির চোখে পানি। নিধি ভাবছে
আবির এর কি হলো ও তো এমন না।
আবির কে খুব ভাল করেই চিনে নিধি
প্রেম করে বিয়ে হয়েছে ওদের। আবির
নিধির চেয়ে পড়াশোনায় কম। কিন্তু
নিধি জানে আবির ওকে নিজের
চেয়েও বেশী ভালবাসে। আবির
নিধিকে অনেক বার বলেছে আমি কি
তোমার যোগ্য.!!? দেখো আবির
ভালবাসা যোগ্যতা দিয়ে হয় না তুমি
আর এসব কথা বলবে না। নিধি আবিরের
অনেক কথাই মানতে চাইতো না যুক্তি
দেখানোর চেষ্টা করতো। আবির কিছু
বলতো না জোর করতো না।
.
বিছানা ঠিক করতে যেয়ে নিধি
একটা চিরকুট পেলো।
আবিরের লিখা।
" বাবু তোমাকে ছাড়া থাকা কষ্টের।
তোমার সাথে অন্য কাউকে দেখা
আরো অনেক অনেক বেশী কষ্টের যা
আমি নিতে পারবো না/ পারছি না।
আমি চেষ্টা করেছি কিন্তু তোমাকে
ফিরাতে পারিনি। হয়তো আমার কোন
মূল্য নেই এখন আর তোমার কাছে তাই
চলে যাচ্ছি ............ আজ থেকে তুমি
স্বাধীন, মুক্তো। বাবু 'আমার কথা মনে
পড়লে আকাশের তারাঁর দিকে
তাকাবে সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাঁ টাই
আমি' দূর থেকে তোমায় দেখবো কথা
বলবো আমার বাবুটার সাথে। লক্ষী
হয়ে থেকো, ভাল থেকো।"
.
সাথে সাথে আবিরের মোবাইলে কল
দিলো নিধি মোবাইল বন্ধ। কি করবে
বুঝতেছেনা নিধি আবির অন্য
ছেলেদের তুলোনায় খুব বেশী
ইমোশনাল। নিধি ফ্যামিলির সবার
কাছে কলল দিলো। সবাই আবিরের
নাম্বার বন্ধ পাচ্ছে।.!! নিধি
কাঁদতেছে সবাই আবির কে খুঁজতেছে।
৪-৫ ঘন্টা পর খবর পাওয়া গেলো
আবিরের লাশ হাসপাতালে.! রোড
এক্সিডেন্টে মারা গেছে আবির।
নিধি পাথর হয়ে গেল নিধি জানে
এটা এক্সিডেন্ট না আবির আত্যহত্যা
করছে। আর এ জন্য দায়ী নিধি।
.
নিধি এখন রাত হলেই ছাদে গিয়ে
বসে থাকে আবিরের সাথে কথা
বলার জন্য। ছাদে গিয়ে সবচেয়ে
উজ্জ্বল তাঁরা টার দিকে তাকিয়ে
থাকে আর কথা বলে।
" বাবু কেমন আছো তুমি আমাকে
ছেড়ে.? বাবু আমি এখন কারো সাথে
কথা বলি না। শুধু তোমার সাথে বলি
আমি শুধু তোমার বাবু। আমি তোমাকে
অনেক কষ্ট দিছি বাবু তাই না। আমি খুব
পচা। কি বললে.?? আমার বাবু টা পচা
না। তাহলে আমাকে একা রেখে চলে
গেলা কেন।!?" এভাবেই প্রতিদিন
নিধি কথা বলে আবিরের সাথে।
.
নিধি কে ডাঃ দেখানো হয় আস্তে
আস্তে নিধি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
নিধি বিকাল হলেই ছাদে গিয়ে বসে
থাকে আবিরের জন্য.......................!!!!!
.
(প্রিয় মানুষ টাকে হারালে বুজবেন
সে কি ছিল, প্রিয় মানুষ টাকে আগলে
রাখুন)
||

No comments:

Post a Comment